,

ইনাতগঞ্জ বাজার জামে মসজিদকে দু’তলা ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা :: সংঘর্ষের আশংকা

স্টাফ রিপোর্টার : নবীগঞ্জ উপজেলার ৩নং ইউপির ইনাতগঞ্জ বাজার জামে মসজিদের দু’তলা ভবন নির্মাণ কাজকে কেন্দ্র করে গতকাল রবিবার সকাল থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন। দাতা সদস্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে ইনাতগঞ্জ ফাড়িঁর এসআই আবু বক্কর এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ কাজ বন্ধ করলেও পরবর্তীতে গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে পূণঃরায় কাজ শুরু করলে উত্তেজনা চরম আকার ধারন করে। এক পর্যায়ে বিকালে নবীগঞ্জ থানা থেকে ওসি (তদন্ত) গোলাম মোর্শেদ এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজটি বন্ধ করেন। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মৃত ইব্রাহিম উল্যার পুত্র দাতা পরিবারের সদস্য আশাহীদ আলী আশা।
স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দাতা পরিবারের সাথে জামে নামকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছে। কতিপয় লোকজন ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের নাম পরিবর্তন করে ছালেহা জামে মসজিদ হিসেবে নাম করণ করা হলে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে দাতা পরিবারের সদস্য সাংবাদিক আশাহীদ আলী আশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে দরখাস্ত প্রদান করেন।
উক্ত দরখাস্তে উল্লেখ্য ঐতিহ্যবাহী ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের নাম কতিপয় লোকজন অর্থের বিনিময়ে পরিবর্তন করে জনৈকা লন্ডন প্রবাসী ছালেহা বেগমের নামে নামকরণ করা হয়। এ সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে দাতা সদস্য আশাহিদ আলী আশার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদনে দুর্নীতি ও অনিয়মেরও সত্যতা পাওয়া যায়। এরপ্রেক্ষিতে কতিপয় আমিনুল রহমান মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন নং ৩৪১০/২০২২ইং দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি বিগত ১৫/৩/২০২২ইং সালেহা জামে মসজিদ বাংলাদেশ ওয়াকফ এস্টেট’কে সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করার জন্য দায়িত্ব পালনের আদেশ প্রদান করেন। ওয়াকফ এস্টেট নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আশাহীদ আলী আশা সহ মহামান্য হাইকোর্টে রীট পিটশন দাখিল করেন আমিনুর রহমান। রীট পিটশন বিচারাধীন থাকায় অবস্থায় বাংলাদেশ ওয়াকফ এস্টেট এবং আদালতের অনুমতি ছাড়াই প্রভাবশালী হাজী হেলিম উদ্দিন ও আমিনুর রহমানগণ গতকাল সোমবার সকালে মসজিদের দু’তলা ভবনের কাজ শুরু করেন। এ ব্যাপারে দাতা পরিবারের সদস্য আশাহীদ আলী আশা শান্তি শৃংখলা রক্ষার্থে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলী ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। গত ১লা অক্টোবর ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির এসআই আবু বকর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাজ বন্ধ করেন। গতকাল সোমবার সকালে আমিনুল, হাজী হেলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে কাজ পূণঃরায় শুরু করেন। ফলে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। এ বিষয়ে ইনাতগঞ্জ ফাড়িঁ ইনচার্জ মুছলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা আদালতের বিষয়। আদালত কাজ বন্ধ করার নিদের্শ দিলে তার কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। বাংলাদেশ ওয়াকফ এস্টেট হবিগঞ্জের হিসাব নিরীক কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন জানান, উক্ত মসজিদের অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী হলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার। আমাদের অফিস বা আদালত থেকে কোন অনুমতি ছাড়া মসজিদের নির্মাণ কাজ বিধি সম্মত নয়। এ ব্যাপারে আমিনুর রহমান জানান, কাজ করাতে আইনী কোন জটিলতা নাই। এদিকে উক্ত মসজিদ এর দু’তলা নির্মাণ কাজকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, যে কোন সময় বড় ধরনের দাঙ্গা হাঙ্গামা সংঘটিত হতে পারে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।


     এই বিভাগের আরো খবর